সুবাদারি ও নবাবি— এ দুই পর্বে বাংলায় মুঘল শাসন অতিবাহিত হয় । বারোভূঁইয়াদের দমনের পর সমগ্র বাংলায় সুবাদারি প্রতিষ্ঠিত হয় । মুঘল প্রদেশগুলো ‘সুবা' নামে পরিচিত ছিল । বাংলা ছিল মুঘলদের অন্যতম সুবা। সতেরো শতকের প্রথম দিক থেকে আঠারো শতকের শুরু পর্যন্ত ছিল সুবাদারি শাসনের স্বর্ণযুগ । সম্রাট আওরঙ্গজেবের পর দিল্লির দুর্বল উত্তরাধিকারীদের সময়ে মুঘল শাসন শক্তিহীন হয়ে পড়ে। এ সুযোগে বাংলার সুবাদারগণ প্রায় স্বাধীনভাবে বাংলা শাসন করতে থাকেন । মুঘল আমলের এই যুগ ‘নবাবি আমল’ নামে পরিচিত ।
সুবাদারি ও নবাবি আমল:
সুবাদার ইসলাম খান ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে বারোভূঁইয়াদের দমন করে সমগ্র বাংলায় সুবাদারি শাসন প্রতিষ্ঠা করেন । ১৬১৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পর বেশ কয়েকজন সুবাদার বাংলার ক্ষমতা গ্রহণ করেন । তবে ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে সুবাদার মীর জুমলা ক্ষমতা গ্রহণ করার পূর্ব পর্যন্ত কোনো সুবাদারই তেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেননি । তাঁদের মধ্যে ইসলাম খান চিশতি (১৬১৭-১৬২৪ খ্রিষ্টাব্দ) এবং দিল্লির সম্রাজ্ঞী নুরজাহানের ভাই ইব্রাহিম খান ফতেহ জঙ্গ (১৬১৭-১৬২৪ খ্রিষ্টাব্দ) বাংলার সুবাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর খুব অল্প সময়ের জন্য সুবাদার নিযুক্ত হন দারার খান, মহব্বত খান, মুকাররম খান এবং ফিতাই খান ।
সম্রাট শাহজাহান ক্ষমতা গ্রহণ করার পর বাংলার সুবাদার হিসেবে কাসিম খান জুয়িনীকে নিয়োগ করেন ১৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে । হুসেন শাহি যুগ থেকেই বাংলায় পর্তুগিজরা বাণিজ্য করত। এ সময় পর্তুগিজ বণিকদের প্রতিপত্তি অনেক বেড়ে যায় । ক্রমে তা বাংলার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় । কাসিম খান জুয়িনী শক্ত হাতে পর্তুগিজদের দমন করেন। কাসিম খানের পর সুবাদার ইসলাম খান মাসহানি ( ১৬৩৫-১৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দ) চার বছর শাসন করেন। অতঃপর শাহজাহান তাঁর দ্বিতীয় পুত্র শাহ সুজাকে বাংলার সুবাদার করে পাঠান। সুজা বিশ বছর দায়িত্বে ছিলেন। মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ছিল সুজার শাসনকাল। বিদেশি বণিক গোষ্ঠীর মধ্যে ইংরেজরা এ সময় সুবাদারের কাছ থেকে কিছু বাড়তি সুবিধা লাভ করছিল। এতে বাণিজ্যের পাশাপাশি ইংরেজদের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ১৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট শাহজাহান অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর চার পুত্রের প্রত্যেকেই সম্রাট হওয়ার জন্য বিদ্রোহ করেন। এ সময় আওরঙ্গজেবের সাথে শাহ সুজার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। দুই ভাইরের যুদ্ধে ১৬৫৯ খ্রিষ্টাব্দে শাহ সুজা পরাজিত হন। পরাজিত হয়ে তিনি আরাকান গমন করেন। সেখানে পরে তিনি সপরিবারে নিহত হন।
আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলা সুজাকে দমন করার জন্য বাংলার রাজধানী জাহাঙ্গীরনগর পর্যন্ত এসেছিলেন। ভাই সম্রাট আওরঙ্গজেব মীর জুমলাকে (১৬৬০-১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দ) বাংলার সুবাদারের দায়িত্ব দেন। কুচবিহার এবং আসাম বিজর মীর জুমলার সামরিক প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে। তাঁর সময়েই কুচবিহার সম্পূর্ণরূপে প্রথমবারের মতো মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। আসাম অভিযানের দ্বারা তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের সীমান্ত আসাম পর্যন্ত বর্ধিত করেন।
শায়েস্তা খান:
মীর জুমলার মৃত্যুর পর প্রথমে লিলি খান ও পরে দাউদ খান অস্থায়ী সুবাদার হিসেবে বাংলা শাসন করেন । ১৬৬৪ সালে আওরঙ্গজেবের মামা শায়েস্তা খানকে বাংলার সুবাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ১৬৮৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। শায়েস্তা খান ছিলেন একজন সুদক্ষ সেনাপতি ও দূরদর্শী শাসক। তিনি মগদের উৎপাত থেকে বাংলার জনগণের জান-মাল রক্ষা করেন। তিনি সন্দ্বীপ ও চট্টগ্রাম অধিকার করে আরাকানি জলদস্যুদের সম্পূর্ণরূপে উৎখাত করেন । সুবাদার শায়েস্তা খান কুচবিহার, কামরূপ, ত্রিপুরা প্রভৃতি অঞ্চলে মুঘল শাসন সুষ্ঠুভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। সীমায় এলাকার নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়। তাঁর ভয়ে আসামের রাজা মুঘলদের বিরুদ্ধে শত্রুতা করতে সাহস পাননি। সুবাদারির শেষ দিকে শায়েস্তা খানের সাথে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরোধ ৰাখে । ইংরেজদের ক্ষমতা এত বৃদ্ধি পেতে থাকে যে, তারা ক্রমে এদেশের জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দেয়। দীর্ঘদিনের চেষ্টার পর শায়েস্তা খান বাংলা থেকে ইংরেজদের বিতাড়িত করেন। শায়েস্তা খানের পর একে একে খান-ই-জাহান বাহাদুর, ইব্রাহিম খান ও আজিমুদ্দিন বাংলার সুবাদার হন। তাঁদের সময় বাংলার ইতিহাস তেমন ঘটনাবহুল ছিল না।
শায়েস্তা খান তাঁর শাসন আমলে বিভিন্ন জনহিতকর কাজের জন্য স্মরণীয় হরে রয়েছেন। তাঁর সমরে সাম্রাজ্যের সর্বত্র অসংখ্য সরাইখানা, রাস্তা ও সেতু নির্মিত হয়েছিল। দেশের অর্থনীতি ও কৃষি ক্ষেত্রে তিনি অভাবিত সমৃদ্ধি আনয়ন করেছিলেন। জনকল্যাণকর শাসনকার্যের জন্য শুধু বাংলায় নয়, সম ভারতবর্ষেও তিনি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তার সমরে দ্রব্যমূল্য এত সন্ধা ছিল যে, টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেত। শায়েস্তা খানের আমলে বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূলে ছিল শিল্প ও ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসার। এ আমলে কৃষিকাজের সঙ্গে শিল্প ও ব্যবসার-বাণিজ্যেরও যথেষ্ট উন্নতি হয়। শায়েস্তা খান ব্যবসায়-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিদেশি বণিকদের উৎসাহিত করতেন।
শায়েস্তা খানের শাসনকাল বাংলার স্থাপত্য শিল্পের জন্য বিশেষ উল্লেখযোগ্য। বিচিত্র সৌধমালা, মনোরম সাজে সজ্জিত তৎকালীন ঢাকা নগরী স্থাপত্য শিল্পের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগের সাক্ষ্য বহন করে। স্থাপত্য শিল্পের বিকাশের জন্য এ যুগকে বাংলায় মুঘলদের 'স্বর্ণযুগ' হিসেবে অভিহিত করা যায় । তাঁর আমলে নির্মিত স্থাপত্য কর্মের মধ্যে ছোট কাটারা, লালবাগ কেল্লা, বিবি পরির সমাধি সৌধ, হোসেনী দালান, সফি খানের মসজিদ, বুড়িগঙ্গার মসজিদ, চক মসজিদ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। মোটকথা, অন্য কোনো সুবাদার বা শাসনকর্তা ঢাকায় শায়েস্তা খানের মতো নিজের স্মৃতিকে এত বেশি জ্বলন্ত রেখে যেতে পারেননি। বস্তুত ঢাকা ছিল শায়েস্তা খানের নগরী ।
নবাব মুর্শিদকুলি খান:
১৭০০ সালে বাংলার ক্ষমতায় আসেন মুর্শিদ কুলি খান। তিনি ১৭২৭ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। প্রথমে তাঁকে বাংলার দেওয়ান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় । দেওয়ানের কাজ ছিল সুবার রাজস্ব আদায় ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা। সম্রাট ফররুখ শিয়ারের রাজত্বকালে মুর্শিদ কুলি খান বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন। মুর্শিদ কুলি খান যখন বাংলায় আগমন করেন, তখন বাংলার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল। এ পরিস্থিতির মুখে তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে বাংলায় মুঘল শাসন পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হন । স্বীয় ব্যক্তিত্ব, বিচক্ষণতা ও বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তিনি বাংলার ইতিহাসের গতিকে পরিবর্তন করেছিলেন।
সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর দুর্বল মুঘল সম্রাটগণ দূরবর্তী সুবাগুলোর দিকে তেমন দৃষ্টি দিতে পারেননি । ফলে, এসব অঞ্চলের সুবাদারগণ অনেকটা স্বাধীনভাবে নিজেদের অঞ্চল শাসন করতে থাকেন। মুর্শিদ কুলি খানও অনেকটা স্বাধীন হয়ে পড়েন। তিনি সম্রাটের নামমাত্র আনুগত্য প্রকাশ করতেন এবং বার্ষিক ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা রাজস্ব পাঠাতেন। মুর্শিদ কুলি খানের পর তাঁর জামাতা সুজাউদ্দিন খান বাংলার সিংহাসনে বসেন। এভাবে বাংলার সুবাদারি বংশগত হয়ে পড়ে। আর এরই পথ ধরে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলার স্বাধীন শাসন । নবাব মুর্শিদ কুলি খানের সময় থেকেই বাংলা সুবা প্রায় স্বাধীন হয়ে পড়ে। এ সময় সুবাকে বলা হতো “নিজামত' আর সুবাদারের বদলে পদবি হয় 'নাজিম'। নাজিম পদটি হয়ে পড়ে বংশগত। সুবাদার বা নাজিমগণ বাংলার সিংহাসনে বসে মুঘল সম্রাটের কাছ থেকে শুধু একটি অনুমোদন নিয়ে নিতেন। তাই, আঠারো শতকের বাংলায় মুঘল শাসনের ইতিহাস নিজামত বা নবাবি আমলরূপে পরিচিত। আর প্রায় স্বাধীন শাসকগণ পরিচিত হন 'নবাব' হিসেবে।
রাজস্ব সংস্কার মুর্শিদ কুলি খানের সর্বাধিক স্মরণীয় কীর্তি। তিনি ভূমি জরিপ করে রায়তদের সামর্থ্য অনুযায়ী রাজস্ব নির্ধারণ করেছিলেন। রাজস্ব আদায়কে নিশ্চিত ও নিয়মিত করার জন্য তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন । তিনি কর্মচারীদের সাহায্যে ভূমির প্রকৃত উৎপাদিকা শক্তি ও বাণিজ্য করের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতেন। এ পদ্ধতিতে মধ্যস্থ ব্যক্তিদের দ্বারা প্রজাদের হয়রানির কোনো সুযোগ ছিল না । মুর্শিদ কুলি খান দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়-বাণিজ্যে প্রসারের গুরুত্ব বিশেষভাবে উপলব্ধি করেছিলেন। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ইংরেজ, ফরাসি ও পারসিক ব্যবসারীদের তিনি উৎসাহ প্রদান করতেন ।ব্যবসায়ীরা যাতে নির্দিষ্ট হারে প্রচলিত কর প্রদান করে এবং তাদের প্রতি যাতে কোনো অবিচার করা না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতার কারণেই বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হয়েছিল । কলকাতা, চুঁচুড়া ও চন্দননগর বিভিন্ন বিদেশি বণিকদের ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে ।
সুজাউদ্দিন খান:
মুর্শিদ কুলি খানের কোনো পুত্র সন্তান ছিল না। তাই তাঁর কন্যা জিনাত-উন-নিসার স্বামী সুজাউদ্দিন খানকে ১৭২৭ সালে সম্রাট ফররুখ শিয়ার বাংলার সুবাদার নিয়োগ করেন। তিনি ১৭৩৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। সুজাউদ্দিন একজন স্বাধীন নবাবের মর্যাদা নিয়ে সিংহাসনে বসেন। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ শাসক। বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা-তিন প্রদেশেরই নবাব হয়েছিলেন তিনি। তিনি তাঁর আত্মীয়স্বজন ও বিশ্বাসভাজনদের উচ্চপদ দান করেন। জমিদারদের সাথেও একটি সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন । কিন্তু সুজাউদ্দিনের শেষ জীবন সুখে কাটেনি । প্রাসাদের অনেক কর্মকর্তা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকেন। কিন্তু দক্ষ হাতে তিনি সংকট মোকাবিলা করেন। সুজাউদ্দিনের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র সরফরাজ খান বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাব হন । তাঁর অযোগ্যতার কারণে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় । এ সুযোগে বিহারের নায়েব-ই-নাজিম আলিবর্দি খান সরফরাজকে আক্রমণ করেন। সরফরাজ পরাজিত ও নিহত হন ।
আলিবর্দি খান:
মুঘল সম্রাটের অনুমোদনে নয়, বরং বাহুবলে বাংলার ক্ষমতা দখল করেন আলিবর্দি খান। আলিবর্দি খানের শাসনকালে (১৭৪০-১৭৫৬ সাল) বাংলায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেকদিন ধরেই বর্গি নামে পরিচিত মারাঠি দস্যুরা বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রমণ করে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল । আলিবর্দি খান ১৭৪২ থেকে ১৭৫১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ১০ বছর প্রতিরোধ করে বর্গিদের দেশছাড়া করতে সক্ষম হন। তাঁর শাসনকালে আফগান সৈন্যরা বিদ্রোহ করলে তিনি শক্ত হাতে তা দমন করেন । আলিবর্দির সময়ে ইংরেজসহ অনেক ইউরোপীয় বণিকের বাণিজ্যিক তৎপরতা বাংলার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। একই সাথে তাঁরা সামরিক শক্তিও সঞ্চয় করতে থাকে। আলিবর্দি খান শক্ত হাতে বণিকদের তৎপরতা রোধ করেন ।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা:
আলিবর্দি খান তাঁর কনিষ্ঠ কন্যা আমেনা বেগমের পুত্র সিরাজউদ্দৌলাকে তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন । আলীবর্দির প্রথম কন্যা ঘষেটি বেগমের ইচ্ছে ছিল তাঁর দ্বিতীয় ভগ্নির পুত্র শওকত জঙ্গ নবাব হবেন । ফলে তিনি সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকেন। কয়েকজন অভিজাতের সমর্থন লাভ করেন ঘষেটি বেগম। তাদের মধ্যে রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ, মীর জাফর, উমিচাঁদ, রাজবল্লভ প্রমুখের নাম উল্লেখ করা যায় । প্রাসাদের ভেতরের এ ষড়যন্ত্রকে কাজে লাগায় বাংলায় বাণিজ্য করতে আসা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সুচতুর ইংরেজ বণিকরা । ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে তারা হাত মেলায়। অবশেষে, ইংরেজদের সাথে যুদ্ধ বাধে নবাবের । ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশির যুদ্ধে নবাবের সেনাপতি মীর জাফর বিশ্বাসঘাতকতা করে যুদ্ধে অংশগ্রহণে বিরত থাকেন । অসহায়ভাবে পরাজয় ঘটে সিরাজউদ্দৌলার । এভাবেই পলাশির যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলায় ইংরেজ শাসনের ভিত্তি স্থাপিত হয় । আর একই সাথে বাংলার মধ্যযুগেরও অবসান ঘটে ।
common.read_more